সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:বরিশাল নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধিন ২৯নং ওয়ার্ডের লুৎফর রহমান সড়কে এবার এক রাজমিস্ত্রিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই এলাকার শাহ জালাল লেনে ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত দিনমজুর দুলাল ঢালী (৪৫) লুৎফর রহমান সড়কের জয়নাল আবেদীনের বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং বশির উদ্দিন ঢালীর ছেলে।
পরিবারের দাবী প্রতিবেশী মুদী দোকানীর মারধরের শিকার হয়ে দুলাল ঢালী নামের ওই দিন মজুরের মৃত্যু হয়েছে। টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তার উপর এই হামলা হয়েছে বলেও অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট ছাড়া এটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু সে সম্পর্কে মুখ খুলতে রাজি হয়নি পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী সুমী আক্তার জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে তার স্বামী দুলাল ঢালী কর্কট মেজাজ নিয়ে ঘরে ফেরে। এসে তিনি গোসল করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিন্তু গোসল করতে না গিয়ে ফিরে এসে স্ত্রীর কাছে একটি দা চায়। বলে প্রতিবেশী মুদী দোকানী জাহাঙ্গীর হোসেনকে কোপাবে। এই বলে দা নিয়ে বের হওয়ার সময় দুলাল ঢালী মাটিতে লুটে পড়ে। পাশাপাশি তার একটি কান থেকে অঝড়ে রক্ত ঝড়তে শুরু করে। তাৎক্ষনিক ভাবে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানার দায়িত্বে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান আহমেদ সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা নিহতের স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শেবাচিমের মর্গে প্রেরন করেন।
এদিকে দুলালের মৃত্যু ঘটনায় এলাকা জুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী মুদী দোকানী জাহাঙ্গীরের এক থাপ্পরে দুলাল ঢালীর মৃত্যু হয়েছে বলে গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে। এর কারন বিশ্লেশন করে স্থানীয় কেউ কেউ বলছে, মুদী দোকান থেকে দুলাল ঢালী বাকিতে মালামাল নিয়েছিলো। পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য সময় দিয়েছিলো দুলাল। কিন্তু ঠিক সময়ে টাকা দিতে না পারায় বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে দুলাল ও জাহাঙ্গীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হয়ে দুলালকে মারধর সহ মাথায় আঘাত করে। এজন্যই তার মস্তিস্কের অভ্যন্তরে রক্ত ক্ষরণ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দুলাল ঢালী।
অপরদিকে নিহতের ভাগিনা নিশাত জানায়, কিছুদিন ধরে তার মামা দুলাল ঢালী, মুদী দোকানী জাহাঙ্গীর এবং স্থানীয় শাহ আলম সহ চারজনের মধ্যে পিলারের ম্যাগনেট সংক্রান্ত কোন একটি বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিলো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটু ঝামেলায়ও চলছিলো। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে দাবী নিহতের ভাগিনার।
তবে এয়ারপোর্ট থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইমরান আহমেদ বলেন, দুলাল ঢালীর শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু হয়। স্বজনরা সেখান থেকে লাশ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে পুনরায় শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মৃত দুলাল ঢালীর স্ত্রী অভিযোগ করেছে তার স্বামীকে ঘরের পার্শ্ববর্তী মুদী দোকানী জাহাঙ্গীর হত্যা করেছে। তবে এমন অভিযোগ করা হলেও দুলাল ঢালীকে মার ধরের ঘটনা কেউ দেখেনি। যে কারনে আপাতত ঘটনাটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নই। তবে মৃত দুলাল ঢালীর কান থেকে রক্ত বের হওয়ার আলামত সুরত হাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিটা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে। অবশ্য যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে জাহাঙ্গীর নামের সেই মুদী দোকানীকে আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Leave a Reply